Love Story
Love

সে'দিন ছিলো বর্ষা।প্রকৃতি সেজেছিলো এক অপরূপ সাজে।বাড়ির উঠোন বৃষ্টিতে ভিজে পুরো একাকার।হঠাৎ ঝন-ঝন নূপুরের শব্দ যেনো আমার কানে এসে বাঁধলো।

এ'দিক- সেদিক তাকিয়ে দেখি কেউ ই নেই।হঠাৎ একটু দূরে চোখ বুলাতেই দেখি একটি মেয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে আর আকাশের দিকে দুহাত তুলে যেনো বর্ষাকে আগলে রাখতে দুহাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।তার পায়ের নূপুরের ছন্দে চারিদিক মুখরিত।
 
আমি ছাতা নিয়ে দৌড়ে গেলাম সেখানে।দেখি ও 'মা' এ তো আমার নীলপরী,আমার হৃদয়ের টুকরা বৃষ্টিকে আপন করে নিতে চাচ্ছে।নীলপরী আমাদের পাশের বাসার নতুন প্রতিবেশী।প্রথম দিন তাকে দেখে আমার ভাল লেগে যায়।'নীলপরী' খুবই লাজুক স্বভাবের।দূর্ভাগ্য আমি নীলপরীকে আমার ভালবাসার কথা আজ ও বলতে পারি নি!

"সেদিন যেহেতু তার মন ভাল ,তাই মনে-মনে ভেবে রেখেছি সেদিনটিতে বলে দিবো ই আমি তাকে ভালবাসি"।নীলপরীর বাসাটা আমার বাসার পাশেই ছিলো।নীল পরীকে গত একটি বছর ধরে ভালবাসার কথা বলতে চেয়ে ও বলতে পারি নি।
এবার ঠিক করে রেখেছি বলবো'ই।
দিনটি ছিলো ১৪ই ফেব্রুয়ারী,বিশ্ব ভালবাসা দিবস।মনে, মনে ভাবলাম আজ বোধয় ভালবাসার কথা বললে খুব খুশি হবে নীল পরী।আমি ভয়,ভয় হৃদয়ে,ছোট, ছোট পা ফেলে নীলপরীর সামনে দাড়াতে'ই নীল পরী দৌড়ে তার ঘরের দিকে চলে গেলো।মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেলো। ইশ! আজ ও বলতে পারলাম না!

নীলপরীর এক বান্ধবীকে একবার নীল পরীর কথা বলেছিলাম।এমন কি এ ও বলেছিলাম, তাকে আমি ভালবাসি।কিন্তু বন্ধুকে বলে লাভ কি? সে কথা আর পৌছায়নি তার কাছে।নীলপরীরা দুই বোন,নীলপরী ছোট,তাই পরিবারে'র সকলের আদরের সে।নীলপরী মেট্রিক পাস করে, আইয়ে ভর্তি হয়েছে।
দেখতে যেমন সুন্দরী,পড়ালেখায় ও নাকি তেমন'ই পটু।আমি তাহার সব খবর'ই রাখতাম।কিন্তু সে কথা পরী জানতো না।'ও বলে রাখি, যেহেতু প্রথম দেখায় ভাললাগা এবং তার সাথে কোন কথা হয়নি। তাই তার নামটি ও জানা হয়নি।'কিন্তু তাতে কি আমি নিজেই তার নাম রেখে দিয়েছি "নীলপরী"।
পরে জানলাম আসলে নাম তার বর্ষা।নীলপরী খুব লাজুক স্বভাবের হলে ও তার মাঝে একটা অহঙ্কার বোধ কাজ করতো।
মাঝে, মাঝে আত্ম-অহঙ্কারের জোরে মানুষকে মানুষ মনে করতো না,এটা ছিলো আমার ধারণা।
হঠাৎ করে মনে হলো একদিন নীলপরী প্রেমে পড়ে গেলো।তা ও সেটা আমার মনে,মনে ভাবনা।কারণ 'আমি যখন বাড়ি থেকে বের হতাম,তখন মনে হতো নীলপরী যেনো আমায় দেখে হাসছে।'
কিন্তু দূর থেকে তো আর হাসির মর্মটা বুঝা সম্ভব নয়,তাই লুকিয়ে, লুকিয়ে প্রতিদিন তা ই দেখতাম।চুপি, চুপি নিজেও হাসতাম।আর ভাবতাম "লেগে থাকলে ভাগীদার হওয়া যায়।"
আসলে আমার ধারণা ছিলো ভুল। নীলপরীর গত এক বছর ধরে চোখে দেখে না।কি রোগ হয়ে যেনো চোখ দুটি নষ্ট হয়ে গেছে।তাইতো ও কোন দিন আমার আবেগ কিংবা দাড়িয়ে থাকা দেখে ও নি,অনুভব ও করে নি।
কিন্তু আজ যখন জানলাম ও দূনিয়ার আলো দেখতে পায় না, তখন যেনো ভালবাসাটা বেড়ে গিয়েছে।এবার আমি ঠিক নীলপরীকে আমার ভালবাসার কথা বলবো।ঐ দৃষ্টিহীন রমনীকে জীবন সঙ্গীনি করবো।

Post A Comment:

0 comments: