আমি ও সোমা
Love Story


আজিম উল্যাহ হানিফ : আমাদের পাশের ঘরটি সোমাদের। আধুনিক রুচিশীল একটি পরিবারে জন্ম তার। তারা ৫ বোন। ভাই নেই।

সম্পর্কে সে আমার কাজিনই হবে। বেশ কয়েকদিন যাবত তার জন্য মায়া মায়া লাগছিল আমার। তাকে দেখলে আমার আগের চেয়ে একটু বেশি টান টান অনুভব হচ্ছে। ও আমার চাইতে ২ বছরের ছোটই হবে। ছোট হলে কি হবে ও সব কিছু বুঝে কি না জানি না। ওর স্বভাব,চরিত্র,মায়াবী মুখ সবই আমার ভালো লাগে।
আমি বাড়ির পাশে হাইস্কুলটিতে ৮ম শ্রেণীতে পড়ি। আর সে পড়ে ক্লাস সেভেনে। রাতের ঘুমের ঘোরে সোমাকে স্বপ্ন দেখি। স্বপ্নে সোমার হাত ধরে হাঁটছি,কথা বলছি। হাসছিও। ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভাবতে থাকি স্বপ্নটা কি সত্যি হবে! ইদানীং সময়ে এসে একটু নার্ভাস ফিল করছি সোমার সামনে এলে আমি।
আগের মত আগ বাড়িয়ে কথা বলতে পারছি না! কিসের যেন একটা বাঁধা। লজ্জা হয়তো। ধীরে ধীরে প্রবল ভাবে সোমার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। ওর রুপ সৌন্দর্য, টানা টানা চোখ,লম্বা কেশ, লম্বা নাক, লাল ঠোঁট, চুল উঠা কালো গাল, ওষ্ঠসহ পুরো শরীর চুম্বকের মত আমাকে আর্কষিত করে নেয়। আমি সোমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত আড়ালে বা লুকিয়ে দেখি।
সোমাকে আমাকে দেখে কি না জানি না। বাড়ির সবার অলক্ষ্যে কি করা যায় ভাবতে থাকি। বাড়ির ২০০ গজের মধ্যেই স্কুল। নিয়মিত স্কুলে যেতাম। স্কুলে সোমাকে তার বান্ধবীদের সাথে দাঁড়ানো কিংবা আড্ডারত দেখতাম। ক্লাসে বসে আচার খাওয়া অবস্থায় ও চোখে পড়তো তাকে।
স্কুল ছুটির পর বাড়িতে এসেও দেখা হতো। কিন্তু কোথাও আজকাল আগের মত হতো না। একবার বাড়িতে সোমাদের সাথে আমাদের পরিবারের ঝগড়া হয়েছে, কিন্তু আমি সোমাদের কিছু বলিনি, চুপ ছিলাম। সোমার প্রতি দিন দিন বয়সও পরিবেশের ফলে দূরত্ব বাড়তে লাগলো। অন্যদিকে কিসের একটা নেশা,আগ্রহ আমাকে তার প্রতি দূর্বল করতে লাগলো।
চারদিকের পরিবেশ, বন্ধু-বান্ধব, ফেইসবুক আর টিভি চ্যানেল কিংবা পত্র পত্রিকার মাধ্যমে বুঝতে পারলাম আমার প্রেমরোগ! আমি সোমার প্রেমে পড়েছি।আমি সোমাকে ভালবাসতে শিখলাম। কিন্তু বলবো কিভাবে? সাহস হচ্ছিল না।ভয়ে ভয়ে একদিন তার বইয়ের ভিতর গুজে দিলাম চার লাইনের বিশ শব্দের বাংলা ইংরেজি মিশ্রিত সম্ভবত বানানে ভুলে ভরা একটি ছোট্ট চিঠি।
চিঠিটা ছিল এই রকমের- আই লাভ ইউ সোমা।আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই,তুমি খুব সুন্দর,তোমাকে আমার খুব পছন্দ। ইতি-অমুক।’ চিঠি দেওয়ার পর ভাবলাম সে বাড়িতে এসে বিচার দিবে ও গন্ডগোল বাজাবে। কিন্তু বিপরীত কিছু লক্ষ্য করলাম সে আর আগের মত হৈ চৈ করে না,করলেও কম।
ঘর থেকেও তেমন একটা বের হয় না। আমার দিকে ও কেমন একটা তাকায়। অবশ্য মাঝে মাঝে গাল টিপে হাসে। এভাবে চলতে থাকে। কয়েকবছর গড়িয়ে এসএসসি,ইন্টার,ডিগ্রি,মাস্টার্স কমপ্লিট করে চাকরি করছি।
অন্যদিকে সোমা সময়ের পরিক্রমায় ৪ সন্তানের মা। আমি ও বিবাহ করবো আগামী বছর। পাত্রী খুঁজছি। তবে প্রথম প্রেম আবেগ আর ভালো লাগার সেই সোমাকে যে এখনো ভুলতে পারি নি, শুনতে পারি নি সোমাও কি একটি মূহূর্তের জন্য আমাকে ভালোবেসেছে কিনা।

Post A Comment:

0 comments: